আগামী ১ জুন শুরু হচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসর। ১৯৯৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি আসর সম্পন্ন হয়েছে। তাতে হয়েছে অনেক রেকর্ডের ছড়াছড়ি। সেইসব রেকর্ড থেকে আমাদের পাঠকদের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স সেরা পাঁচটি ব্যাটিং ইনিংস ফ্লাশব্যাক করা হলো।
শচীন টেন্ডুলকার (ভারত): ১২৮ বলে ১৪১
১৯৯৮ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম আইসিসি নকআউট (বর্তমানে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) টুর্নামেন্টের তৃতীয় কোয়ার্টারফাইনালে মুখোমুখি হয় ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের ওই ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় ভারত। আর ব্যাটিংয়ে নেমে মহাবিপদেই পড়ে আজহারউদ্দিন-গাঙ্গুলীরা। স্কোর বোর্ডে ৮ রান যোগ হতেই সৌরভ গাঙ্গুলী ও মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরি তুলে নেন ক্রিকেট লিজেন্ড শচীন টেন্ডুলকার। শেষ পর্যন্ত ১৩টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১২৮ বলে ১৪১ রান করেন তিনি।
ম্যাচটিতে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত নৈপুন্যের পর বল হাতে ৩৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন টেন্ডুলকার।
জ্যাক ক্যালিস (দক্ষিণ আফ্রিকা): ১০৭ বলে ১১৩*
আইসিসি নকআউট (বর্তমানে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) ট্রফির প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা। বৃষ্টির কারণে ৫০ ওভারের পরিবর্তে ৩৯ ওভারে পরিণত হয় ইনিংস। ওই ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।সেখান থেকে জ্যাক ক্যালিসের দৃষ্টিনন্দন ইনিংসে ভর করে ৭ উইকেটে ২৪০ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় প্রোটিয়ারা। ৫ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫টি করে চার ও ছক্কায় ১০৭ বলে ১১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। প্রোটিয়া দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ৩০, করেছিলেন ড্যারেল কালিনান। জবাবে ১৩২ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। বৃষ্টি আইনে ৯২ রানের জয় নিয়ে ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিপক্ষ হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার (জিম্বাবুয়ে): ১৪৫ বলে ১৬৪ রান
তৃতীয় আসর থেকে আইসিসি নকআউট ট্রফি নাম বদলে হয় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির তৃতীয় আসর মাঠে গড়ায় কলম্বোতে। ওই আসরে পুল-২ এর ম্যাচে ১৪ সেপ্টেম্বর মুখোমুখি হয়েছিলো ভারত ও জিম্বাবুয়ে। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে মোহাম্মদ কাইফের অপরাজিত ১১১ ও রাহুল দ্রাবিড়ের ৭১ রানে ৬ উইকেটে ২৮৮ রান করে ভারত।
জবাবে ৪৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জিম্বাবুয়েকে একাই সামনের দিকে টেনে নেন উইকেট কিপার অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। তার অসাধারণ ইনিংসের উপর ভর করে এক পর্যায়ে জয়ের স্বপ্নও দেখছিলো জিম্বাবুয়ে। ৪৯তম ওভারের চতুর্থ বলে ফ্লাওয়ার বিদায় নিলে ২৭৪ রান পর্যন্ত গিয়ে ১৪ রানে ম্যাচ হারে জিম্বাবুয়ে। তিন নম্বরে নেমে ১৩টি চারে ২১৫ মিনিট উইকেটে থেকে ১৪৫ বল মোকাবেলা করে ১৬৪ রান করেন ফ্লাওয়ার। ফ্লাওয়ারের এই ইনিংসটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সেরা পাঁচের মধ্যে জায়গা করে নেয়।
শেন ওয়াটসন (অস্ট্রেলিয়া): ১৩২ বলে ১৩৬*
২০০৯ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ষষ্ঠ আসরের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় দক্ষিণ ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ওই ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩২ বলে ১০টি চার ও ৭টি ছক্কায় অপরাজিত ১৩৬ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন ওয়াটসন। তাই ইংলিশদের ২৫৮ রানের টার্গেট ৪৯ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখেই জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। তার ঐ ইনিংসটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরার ইনিংসের একটি। অবশ্য ফাইনালেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১০৫ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে টানা দ্বিতীয়বারের মত শিরোপা এনে দেন ওয়াটসন।
শিখর ধাওয়ান (ভারত): ৯৪ বলে ১১৪ রান
২০১৩ সালের ৬ জুন ইংল্যান্ডের কার্ডিফে ‘বি’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে লড়াইয়ে নামে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ঐ ম্যাচে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পান ভারতের বাঁ-হাতি ওপেনার শিখর ধাওয়ান। ১২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯৪ বলে ১১৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি এবং উদ্বোধণী জুটিতে রোহিত শর্মার সাথে ১২৮ বলে ১২৭ রানের জুটি গড়েন। শেষের দিকে রবীন্দ্র জাদেজার ২৯ বলে অপরাজিত ৪৭ রানে ৭ উইকেটে ৩৩১ রানের বড় স্কোর পায় ভারত। জবাবে ৩০৫ রান পর্যন্ত যেতে সমর্থ হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ভারত জয় পায় ২৬ রানে।